ছুটির দিনে মানেই যেন মানেই আনন্দ আর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো। কিন্তু বাস্তবে অনেকের কাছে এটি হয়ে ওঠে চাপ, দুশ্চিন্তা ও বাড়তি দায়িত্বের সময়। যুক্তরাষ্ট্রে বহু মানুষই উৎসবের সময় অতিরিক্ত স্ট্রেসের মুখোমুখি হন। দেখা যায় উপহার কেনা, ভ্রমণ, পরিবারের সঙ্গে সময়, এমনকি আর্থিক চাপ সব মিলিয়ে আনন্দের মৌসুমটা কখনো কখনো ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে। তবে সচেতন হলে এই চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। হেলথলাইনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ছুটির দিনে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রনের ছয়টি সহজ উপায়। এগুলো হলো:
১. মানসিক চাপের কারণ চিহ্নিত করুন
অনেকেই জানেন না মানসিক চাপ কমানোর প্রথম ধাপ হলো নিজেকে বুঝতে পারা। কোন পরিস্থিতি আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে বা উদ্বেগ বাড়ায় তা বুঝতে পারলে পরবর্তী সময় তা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। উপহার কেনা, ব্যস্ততা, পরিবারের রাজনৈতিক আলোচনা বা প্রিয়জন হারানোর স্মৃতি এসবই অনেককে মানসিকভাবে চাপে ফেলতে পারে।
২. পরিকল্পনা
ছুটির মৌসুম অনেক ব্যস্ততায় ভরা থাকে। তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করা জরুরি। কী কী করতে হবে তার একটি তালিকা তৈরি করুন। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আগে করুন এতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমবে এবং সময়ও বাঁচবে।
৩. নিজেকে অগ্রাধিকার দিন
উৎসবে সবাইকে খুশি করতে গিয়ে অনেকেই নিজের যত্ন নেয়া ভুলে যান। কিন্তু নিজের যত্ন নেওয়া মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। নিয়মিত ঘুম, হাঁটাহাঁটি, ব্যায়াম কিংবা নিজের পছন্দের কোনো কাজে কিছু সময় ব্যয় এসবই আপনাকে মানসিকভাবে হালকা রাখবে।
৪. আর্থিক পরিকল্পনায় সচেতন হোন
অনেকে উৎসব শেষে সবচেয়ে বেশি চিন্তায় পড়েন অতিরিক্ত খরচের কারণে। তাই যা খরচ করবেন আগে থেকেই তার বাজেট করে নিন। মনে রাখবেন উপহার মহামূল্যবান না হলেও আন্তরিকতা থাকলেই তা মূল্যবান হয়ে ওঠে। প্রয়োজনে নিজের তৈরি কিছু উপহার বা সময় ও শ্রমও হতে পারে সেরা উপহার।
৫. হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের স্মরণ করুন
অনেকের জন্য উৎসবের মৌসুম প্রিয়জন হারানোর দুঃখ আরও বাড়িয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তাদের স্মৃতি স্মরণ করা, তাদের নাম করে প্রার্থনা করা বা তাদের স্মরণে কোনো অর্থবহ কাজ করা মানসিক শান্তি এনে দিতে পারে। আর যদি সঙ্গী বা পরিবারের কেউ কাছে না থাকে, স্বেচ্ছাসেবী কাজে যুক্ত হতে পারেন এতে আপনার উপস্থিতিই কারো দিন উজ্জ্বল করতে পারে।
৬. ‘না’ বলতে দ্বিধা করবেন না
সব ইভেন্টে যোগ দেয়া বা সব দায়িত্ব পালন করা আপনার পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে এটা মেনে নেয়াই ভালো। যেখানে আপনার মানসিক শান্তি নষ্ট হবে, সেখানে না বলা একদম স্বাভাবিক। বরং যে কাজগুলো আপনাকে আনন্দ দেবে, সেগুলোই গ্রহণ করুন।
মনে রাখতে হবে মানসিক চাপ একটি খুবই স্বাভাবিক বিস্যম যেটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিজের অনুভূতিকে গুরুত্ব দিন, শরীর–মন যা বলছে তা শুনুন। কোনও পরিস্থিতিতে আপনি চাপ অনুভব করেন এবং কীভাবে তা কমানো যায় এগুলি বুঝে নিলে পুরো ছুটির দিনে হবে আরও আনন্দময়, এবং শান্তিপূর্ণ। নিজেকে বুঝতে পারা আর মনের যত্ন নেয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন না।
এবি