যশোরে ছেলে সন্তান নিয়ে পুলিশ কনস্টেবলের বাড়িতে হাজির হয়েছেন তার স্ত্রী শারমিন আক্তার। তাকে দেখে পরিবারের লোকজন ঘরে তালা মেরে লাপাত্তা হন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা অনেক বোঝানোর পর শারমিনকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী শারমিন জানান, গত ২০১৭ সালে বাহাদুরপুর গ্রামের রফিক উদ্দিনের ছেলে সাদমান হোসেন রাকিবের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন রাকিব বেকার ছিলেন। পরে তিনি পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পান। ২০২২ সালে তাদের বিয়ে হয়। চাকরি করাকালে তারা কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেছেন।
শারমিন আরও জানান, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার উফুলকি গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে যান। গর্ভে সাত মাসের সন্তান থাকা অবস্থায় জানতে পারেন রাকিব বিবাহিত এবং প্রথম স্ত্রীর বিষয়টি গোপন রেখে তাকে বিয়ে করা হয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় এবং পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান জন্মের কিছুদিন পর রাকিব পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় শারমিনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা শুরু করেন। এর আগে বিয়ের সময় তার পরিবার সোনার গহনা ও ঘরের আসবাবসহ ছয় লাখ টাকার মালামাল দিয়েছে।
শারমিন জানান, ২০২৫ সালের ১৭ এপ্রিল রাকিব টাঙ্গাইলে যান এবং ৫ লাখ টাকা না দিলে তাকে ও সন্তানকে ঘরে তুলবেন না বলে জানান। এরপর তিনি টাঙ্গাইলের আদালতে মামলা করেন এবং খুলনা ডিআইজির কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। ডিআইজি বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিলেও পুলিশ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
শারমিন আরও জানান, তার পরিবারও ভরণপোষণ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরে শ্বশুর বাড়িতে চলে আসেন। সন্তানসহ তাকে দেখে রাকিবের বাড়ির লোকজন ঘরে তালা মেরে অন্যত্র চলে যান। স্থানীয়রা রাকিব পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘটনা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, শারমিনকে অনেক বোঝানোর পর বিকেলে তিনি শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যান। তবে প্রথম স্ত্রীর তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করা রাকিবের জন্য অন্যায় হয়েছে।
পুলিশ কনস্টেবল সাদমান হোসেন রাকিব মোবাইলফোনে সাংবাদিকদের জানান, “শারমিনকে তিন মাস আগে তালাক দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রয়েছে। এছাড়া খুলনা রেঞ্জ অফিসে অভিযোগ করেছি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। আইনের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হবে।” তিনি শিশুটির পিতা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
এনআই