উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের আমেজ। তবে ভোর ও সন্ধ্যার সামান্য ঠাণ্ডা ছাড়া দিনের বেশিরভাগ সময়ই আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকায় সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মে তেমন কোনো প্রভাব পড়ছে না। সকালবেলায় হালকা কুয়াশা দেখা গেলেও ৮টার মধ্যেই সূর্যের উষ্ণতা মিলছে, ফলে দিন কাটছে আরামদায়ক আবহে।
গত দুই দিনের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, উত্তরাঞ্চলের অন্যতম শীতপ্রবণ এলাকা তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা সামান্য নিম্নমুখী হলেও শীতের তীব্রতা বাড়েনি। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে। সকাল ৯টায় তা নেমে আসে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রীতে। বৃহস্পতিবারও তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
সকালে হালকা কুয়াশা থাকলেও দিনভর আকাশ থাকে পরিষ্কার। ফলে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার মহিমান্বিত চূড়ার দেখা মিলছে। এ দৃশ্য উপভোগ করতে স্থানীয় লোকজন ছাড়াও অনেকে বাড়ির আঙিনা বা মাঠে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকছেন।
বিকেলের পর বইছে হালকা হিমেল বাতাস, যা সন্ধ্যার দিকে ঠাণ্ডার একটু অনুভূতি বাড়ায়। তবে দিনব্যাপী রোদ থাকায় শিশু থেকে বয়স্ক, সবার জন্যই আবহাওয়া তুলনামূলক আরামদায়ক। বাজার, হাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা অফিসপাড়া সব জায়গাতেই স্বাভাবিক গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তবে নদীর পাড়ে কাজ করা শ্রমিকদের জন্য ভোরের সময়টুকু কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। বালু-পাথর তোলার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, সকালে নদীতে নামায় হাত-পা হিম হয়ে আসে। জীবীকার তাগিদে ঠাণ্ডা পানিতে নামতে হয়। তবে দিনের বেলায় সূর্যের দেখা মেলায় তখন স্বাভাবিক ভাবে কাজ করা যায়।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জীতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘ডিসেম্বরের শুরুতে হালকা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আবহাওয়ার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রোদ থাকলে সাধারণ মানুষের ওপর এর প্রভাব খুব একটা পড়বে না বলে তিনি মনে করেন।’
জেলার বাসিন্দারা বলছেন, এখনকার ঠাণ্ডা খুবই সহনীয়। শীতের শুরুতে এমন আবহাওয়া উত্তরাঞ্চলের মানুষের কাছে পরিচিত। কেউ কেউ আবার জানান, তাপমাত্রা কমলেও দিনের রোদই তাদের জন্য স্বস্তির।
সব মিলিয়ে পঞ্চগড়ে শীতের আগমন স্পষ্ট হলেও এখনও শীত জেঁকে বসেনি। রোদেলা দিন আর হিমেল বাতাস মিলিয়ে চলছে স্বস্তিদায়ক শীতের সময়।
এসএম