বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রকাশিত ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটিতে মিনহাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও আমিরুল ইসলাম রানাকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।
নবগঠিত এ কমিটি আগামী ছয়মাসের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রিফাত রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুঈনুল ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়।
কমিটি ঘোষণার পরদিন সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক-১ আব্দুর রহমান মেহেদী পদত্যাগ করেছেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) তার ফেসবুক আইডিতে এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে আব্দুর রহমান মেহেদী বলেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় কমিটিকে হেয়াটসঅ্যাপে ও ইমেইলে পদত্যাগ পাঠিয়েছি।’
আব্দুর রহমান মেহেদী ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমি মনে করি ২৪-এর জুলাই এ সংগঠনটি সফল হয়েছিল আপামর সব ছাত্রজনতার প্রতিনিধিত্ব করতে। কিন্তু বর্তমানে আমরা ব্যর্থ হয়েছি, সাধারণ ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করতে। সাধারণ ছাত্র এবং জুলাই আন্দোলনে রক্ত দেওয়া যোগ্য ছাত্রদের চেয়ে সুবিধাভোগী নব্য সমন্বয়ক আর ত্রাস সৃষ্টিকারীদেরই প্রভাব এখানে বেশি। এটার দায় আমারও আছে। আমরা পারিনি সংগঠনকে এসব পরিস্থিতি থেকে বের করে আনতে। তাই আমি আপাতত এ সংগঠনের সব পদ থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। পদত্যাগ করছি।,
‘তবে হ্যা, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ সবার সঙ্গেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। আপাতত চলে যাচ্ছি, কোন সংগঠনহীন সাধারণ ছাত্রজনতার কাতারে। সময় দিতে চাই পরিবার এবং কর্মজীবনে। আর আমি চাই সব গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আমার কার্যক্রম এবং সম্পদের সঠিক তদন্ত করে তা প্রকাশ করুক। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’
শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে আব্দুর রহমান মেহেদীর কাছে জানতে চাওয়া হয়- কমিটির ভেতরে কি কোনো ধরনের বৈষম্য বা মতবিরোধ ছিল? আব্দুর রহমান মেহেদী বলেন, ‘হ্যাঁ এই কমিটিতে প্রচুর বৈষম্য ছিলো। আপনারা জানেন যে আমি ছিলাম ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক। এই কমিটিতে সর্বাধিক আহত ব্যাক্তিও আমি। ২০১৩ সাল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত আমি। জুলাই আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। জুলাই আন্দোলনে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৩ শতাধিক ছোররা গুলি বিদ্ধ হয়। আমি দায়িত্ব পালন করলাম ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসাবে। এই কমিটি গঠন হলো আমি জানি না। কেন্দ্র থেকে একজন ফোন করে বললো পরের কমিটিতে কি আপনি কাজ করবেন। আমি বললাম করবো। এরপর দেখলাম তারা কমিটি সাবমিট করে দিয়েছে। ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেছে। এখন দেখছি এই কমিটিতে এমন এমন লোকজন যারা এই আন্দোলনে কোন অংশই ছিল না। ছাত্রলীগের কর্মী ছিল, প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ করেছে সামনের সারিতে এবং তাদের না আছে শিক্ষাগত ভালো কোন যোগ্যতা, না আছে ভালো কোন রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড। না তারা ভালো নেতৃত্ব দিতে পারে । ৫ আগস্টের পরে আমি দেখি নাই তারা কোন জায়গায় ভালো কোন দুইমিনিট বক্তব্য দিতে পারে, কিংবা একটা স্লোগান দিচ্ছে রাস্তায়, এরকম আমি দেখি নাই। এই লোকগুলো কেউ কেউ আমার পদমর্যাদায় সমান, কেউ আমার থেকে জ্যেষ্ঠ, আমি তার আন্ডারে। আমি কিভাবে কাজ করবো। যার কারনে আমি পদত্যাগ করলাম। ৫ আগস্টের পরে তারা শুধু সুবিধা নিয়েছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। তারা মাঠে ময়দানে কাজ করে নাই। আহত ও শহীদ পরিবারের খোঁজ খবর রাখে নাই।’ এই কমিটিতে আহতদের যথেষ্ট পরিমাণে রাখা হয়েছে, তবে ভালো কোন জায়গায় রাখা হয়নি বলে জানান তিনি।
ইখা