কক্সবাজার টেকনাফে লবণের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে প্রান্তিক চাষীদের ঘরে ঘরে চলছে হাহাকার। প্রতিনিয়ত ভুক্তভোগী লবণ চাষীরা সময় মতো পরিবারের সদস্যদের অন্য যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে।
লবণ উৎপাদনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে লবণ বিক্রি করে তার অর্ধেক টাকাও উঠে আসবে না।
এতে করে যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে অত্র উপজেলার প্রান্তিক লবণ চাষীরা ক্ষোভে'দু:খে ফুঁসে উঠেছে।
তারেই ধারাবাহিকতায় রবিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৩ টার দিকে টেকনাফ উপজেলা শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় উক্ত এলাকার প্রান্তিক চাষী ও ব্যবসায়ীরা লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, একটি মানববন্ধনে মিলিত হন।
এসময় মানববন্ধনে অংশ নেওয়া টেকনাফের শ্রেষ্ঠ লবণ উৎপাদনকারী প্রান্তিক লবণ চাষী সংগঠনের নেতা শফিক মিয়া সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, বর্তমানে মাঠে মণপ্রতি লবণ বিক্রি হচ্ছে-১২০–১৪০ টাকায়, অথচ এই লবণ উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে এক মণ ৩০০–৩৫০ টাকায়।
এতে করে লবণ চাষিরা মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন ‘প্রতি কেজি লবণ বিক্রি করে দাম পাচ্ছি মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ টাকা। অথচ সেই লবণ গুলো পরিশোধন করে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা দামে। দেশের গুটি কয়েক লবণ মিল-মালিক সিন্ডিকেট তৈরি করার কারণে চাষিরা লবণের ন্যায্য মূল্য আদায় করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
পাশাপাশি দেশে পর্যাপ্ত লবণ মজুত থাকা সত্ত্বেও ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্ট’ নামে অতিরিক্ত শিল্প লবণ অন্য দেশ থেকে লবণ আমদানি করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে যা দেশীয় শিল্পের প্রতি এবং প্রান্তিক লবণ চাষীদের প্রতি অবিচার করার সামিল।
মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আরো বলেন, অনতিবিলম্বে মাঠপর্যায়ে উৎপাদিত লবণের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ এবং মিল-মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে প্রান্তিক লবণ চাষীদের পরিবারের অভাব অনটনের হাহাকার বন্ধ করে জীবন জিবীকা নিশ্চিত করতে হবে।
তা না হলে চাষীরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায় করার জন্য আমরণ অনশনসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
এ বিষয়ে টেকনাফের চাষি রশিদ আহমদ বলেন, ‘এ এলাকার বেশির ভাগ পরিবারই লবণ চাষের ওপর নির্ভরশীল। পাঁচ টাকা দরে লবণ বিক্রি করলে উৎপাদন খরচই ওঠে না। এভাবে চললে চাষ ছেড়ে দিতে বাধ্য হবো।
উল্লেখ্য,বিসিকের তথ্য মতে জানা যায়, গত মৌসুমে জেলায় ৬৮ হাজার ৫০৫ একর জমিতে লবণ উৎপাদিত হয়েছিল ২৫ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন, যা ৬৩ বছরে সর্বোচ্চ।
চলতি মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। যা গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি।
এফএস