দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের মধ্যকার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে নিজের সেঞ্চুরি উদযাপন করছিলেন বিরাট কোহলি। ঠিক এই সময়েই ঘটল এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে মাঠে ঢুকে কোহলির দিকে ছুটে গিয়ে তার পা ছুঁয়ে ফেলে এক কিশোর। ক্যামেরার ফোকাস হঠাৎই সেদিকে ঘুরে যায়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
রোববার (৩০ নভেম্বর) রাঁচির জেএসসিএ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এই কাণ্ড করা কিশোরটির নাম সৌভিক মুর্মুর। সে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার আরামবাগের বাসিন্দা।
তবে স্বপ্ন পূরণ হলেও সৌভিকের বর্তমান ঠিকানা রাঁচির কারাগার। পুলিশের পক্ষ থেকে সৌভিকের বাড়িতে ফোন আসে তার বাবা সমর মুর্মুর কাছে। এর পরই তার পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারেন। আর তাতেই সৌভিকের বাড়িতে বাড়ছে উৎকণ্ঠা। নাওয়া খাওয়া ভুলে ছেলে কখন বাড়িতে ফিরবে সে অপেক্ষায় দিন গুনছে পরিবারের সদস্যরা।
সৌভিকের বাবা সমর মুর্মু জানান, ছেলে বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় বলেছিল, তার জীবনের ‘ভগবান’ কোহলি, আর জীবনে একবার তার পা ছুঁয়ে দেখাই নাকি সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ হলেও এখন ছেলের অবস্থায় তারা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
কোহলি–অনুরাগী সৌভিক ছোটবেলা থেকেই ভারতীয় ক্রিকেটের দুই কিংবদন্তি বিরাট কোহলি এবং মহেন্দ্র সিং ধোনিকে নিজের রোল মডেল মানে। খেলা দেখার নেশায় বিভিন্ন জায়গায় যেতে সে দ্বিধা করে না। গত বছর ধোনিকে দেখতে আইপিএল চলাকালে হুগলি থেকে সাইকেল চালিয়ে চেন্নাই পর্যন্ত যাত্রা করেছিলেন তিনি।
ছেলের কাজ আইনবিরোধী হলেও গর্বও লুকাতে পারছেন না বাবা সরেন মুর্মু। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, জানি ভুল করেছে। কিন্তু ছেলের কথা ছিল “জীবনে একবার বিরাটকে ছুঁবে”। সে পারল, এটাই আমার গর্ব। আইন যে শাস্তি দেবে আমরা মেনে নেব।’
সৌভিকের মা মঙ্গলি সরেন মুর্মু বলেন, ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য উৎকণ্ঠায় রয়েছি, কিন্তু কি ভাবে ছেলে বাড়ি আসবে তা জানা নেই। ছেলে যে এই ধরনের কাজ করবে সেটা আগে থেকে জানলে ছেলেকে যেতে দিনেন না বলেও জানায় মা।
রাঁচি পুলিশ জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ভঙ্গের কারণে সৌভিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরডি