ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে মৃত্যুর পর বাবার লাশ ২৩ ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছেলে মহসিন আলীর বিরুদ্ধে। উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে স্থানীয়দের উদ্যোগ ও থানা পুলিশের পরামর্শে দাফন হয়েছে মরদেহ। তবে সম্পত্তির কারণে বাবার মরদেহ একা ফেলে রাখা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে।
এর আগে রোববার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বার্ধক্যজনিত কারণে মেয়ের বাড়িতে মারা যান তসলিম উদ্দীন (৭০)। মৃত্যুর পর স্বজনরা রাতেই দাফনের জন্য পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে তার নিজ বাড়ীতে আনলে ছেলে মহসিন আলী তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়।
জানা গেছে, একমাত্র ছেলে ভরণপোষণ না করায় মহিষমারী গ্রামে মেয়ে বিউটি আক্তারের বাড়িতে দীর্ঘদিন ছিলেন তসলিম উদ্দিন।
স্থানীয়রা জানান, মেয়েদের নামে সম্পতি লিখে দেওয়ার কারণে মহসিন আলী মৃতদেহ গ্রহণ করেননি। এমনকি রোববার (৩০ নভেম্বর) রাতেই পিতার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরেই মূলত মরদেহ দাফন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়।
তবে মহসিন বলছেন ঠিক উল্টো কথা। তিনি জানান, বাবা বোনের বাড়িতে মারা যাওয়ায় সন্দেহ হয়েছিল। এ কারণে থানায় অভিযোগ করেছি। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আগের। এইখানে সম্পত্তির কোন বিষয় নয়। এখন আমরা সবাই আপোষ হয়ে গেছি।
এদিকে সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মরদেহ মহসিন আলীর বাড়ীর বারান্দায় খাটিয়ার উপর তসলিম উদ্দীনের মরদেহ রয়েছে। একটি ফ্যানের বাতাস গায়ে দেওয়া হয়েছে। পাশে দুটি চেয়ার পড়ে আছে ফাঁকা। মরেদহর পাশে কোন আত্মীয়-স্বজনকে দেখা যায়নি। বাড়ীতে কথা বলতে চেষ্টা করলেও কেউ মুখ খুলেনি। কথা বলতে চায়নি মরদেহ পড়ে থাকা নিয়ে।
দু্ওসুও ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হবিবুর রহমান বলেন, মৃত্যুর পরপরই জমি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ছেলে লাশ আটকে রাখে। পরে দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করা হয়। দুপুরের পর কবরস্থানে কবর খুড়ার অনুমতি দেয় মহসিন আলী। এরপরে বিকাল ৪টায় জানাযা নামাজ শেষে তার বাবার দাফন করা হয়।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরুল হুদা বলেন, এটি সম্পূর্ণ পারিবারিক সমস্যা। গতরাতে ছেলে একটি অভিযোগ দিয়েছিল। আজ তারা কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ দূর হওয়ায় ময়না তদন্ত ছাড়াই ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দাফন হয়ে গেছে।
এ বিষয় নিয়ে চার মেয়ের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তারা শোকাহত জানিয়ে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি।
আরডি