চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারশত ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রাম যেন অদৃশ্য কোনো আতঙ্কের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। রাত নামলেই এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সন্দেহ–শঙ্কার ঘন অন্ধকার। গত এক সপ্তাহে স্কুল, দোকান ও প্রবাসীদের নির্জন বাড়িসহ সাতটি স্থাপনায় ধারাবাহিক চুরির ঘটনায় গ্রামবাসীর স্বাভাবিক জীবন রীতিমতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকেই ভয়ে থানায় যেতে সাহস পাচ্ছেন না, আবার কেউ কেউ ঝামেলা এড়াতেই চুপসে রয়েছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সপ্তাহ ধরে বোয়ালিয়া গ্রামে যেন ছায়ার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতকারীরা। আমীর মির আহম্মদ, হাফেজ কামাল, প্রবাসী কামাল ও জালাল উদ্দিনের বাড়ি। এরপর জাফরের ছোট্ট চায়ের দোকানেও হানা দেয় চোরের দল। প্রতিটি জায়গায় একই কায়দায় অন্ধকারে ঢুকে মালামাল গায়েব।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার গভীর রাতে পূর্ব বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জানালার গ্রীল কেটে ভেতরে ঢুকে পানির মোটর, সোলার ব্যাটারি, চেয়ার–টেবিলসহ আনুমানিক ৪০ হাজার টাকার মালামাল তুলে নিয়ে যায় চোরেরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিল্টন কান্তি নাথ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে বিদ্যালয়ের জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে অজ্ঞাত চোরেরা। পানির মোটর, সোলার ব্যাটারিসহ আনুমানিক ৪০ হাজার টাকার মালামাল খোয়া গেছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।’
বোয়ালিয়ার বেশিরভাগ পরিবারই বিদেশে কর্মরত স্বজনের ওপর নির্ভরশীল। ফলে রাতের বেলা অনেক বাড়িই পড়ে থাকে ফাঁকা। এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্র, এমনই ধারণা স্থানীয়দের।
বাসিন্দা ইউসুফের ভাষায়, “এ গ্রামে রাত হলেই ভয় ধরে। প্রায় পাঁচ লাখ টাকার জিনিস এক সপ্তাহে চুরি গেছে। লোকজন ঘুমাতে পারছে না।”
সব মিলিয়ে এলাকাজুড়ে এখন ক্ষোভ, উদ্বেগ ও অবিশ্বাসের বাতাস। ঘটনাগুলোর রহস্য উন্মোচনে পুলিশও মাঠে নামছে। আনোয়ারা থানার ওসি মো. মনির হোসেন বলেন, “ছিটকে চোরের কাজ মনে হলেও আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। রাতের টহল বাড়ানো হবে, গ্রাম পুলিশের পাহারাও জোরদার করা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, চোরচক্র চিহ্নিত করতে বিলম্ব হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তারা দ্রুত সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন।
ইখা