এইমাত্র
  • কিছুটা ‍কমেছে সবজির দাম, চড়া তেল-পেঁয়াজ
  • মুক্ত হয় উত্তর-পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা
  • ঝিনাইদহে নসিমন চালককে কুপিয়ে হত্যা
  • দেশে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আভাস
  • যশোরে পোষা কুকুর-বিড়ালে আক্রান্ত বাড়ছে, টিকা সংকট
  • সব ঠিক থাকলে খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেওয়া হবে রোববার
  • নওগাঁয় মাদকসহ ১ জন গ্রেপ্তার
  • বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে অগ্নিসংযোগ-বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ
  • নোয়াখালী প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া
  • ঢাকার পথে ডা. জুবাইদা রহমান
  • আজ শুক্রবার, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    জাতীয়

    ৭১-এর এই দিনে

    মুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও, বরগুনা ও বেনাপোল

    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৫ পিএম
    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৫ পিএম

    মুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও, বরগুনা ও বেনাপোল

    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৫ পিএম

    আজ ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক-হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও, বরগুনা ও বেনাপোল। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে ৭১’র এই দিনে ২ জেলা ও একটি পৌর শহরের আকাশে ওড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের লালসবুজ পতাকা।

    পঞ্চগড় হাতছাড়া হওয়ার পর ২৯ নভেম্বর পাক-হানাদার বাহিনী ঠাকুরগাঁওয়ে শক্ত ঘাঁটি স্থাপন করে। তবে ১ ডিসেম্বর কমান্ডার মাহাবুব আলমের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শহরের দিকে অগ্রসর হলে তীব্র আক্রমণের মুখে ৩ ডিসেম্বর পিছুহটতে বাধ্য হয় হানাদাররা। মুক্তিযোদ্ধাদের আগমনে সেদিন সাধারণ মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়েন।

    ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয় জুলাই মাসের প্রথম দিকে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গেরিলারা হানাদার বাহিনীর ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে। বেশ কিছু ব্রিজ ও কালভার্ট উড়িয়ে দেয় তারা। দালাল রাজাকারদের বাড়ি ও ঘাঁটিতে হামলা চালায়। নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক অভিযান চালায়।

    ১ ডিসেম্বর ভূল্লী ব্রিজ পার হলেও মিত্রবাহিনী যত্রতত্র মাইন থাকার কারণে ঠাকুরগাঁও শহরে ঢুকতে পারেনি। ওই সময় শত্রুদের মাইনে দুটি ট্যাংক ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর এফ এফ বাহিনীর কমান্ডার মাহাবুব আলমের নেতৃত্বে মাইন অপসারণ করে মিত্রবাহিনী ঠাকুরগাঁওয়ের দিকে অগ্রসর হয়। ২ ডিসেম্বর সারারাত প্রচণ্ড গোলাগুলির পর শত্রুবাহিনী ঠাকুরগাঁও থেকে পিছু হটে সৈয়দপুরে আশ্রয় নেয়।

    ৩ ডিসেম্বর ভোরে শত্রুমুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও। তখন মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্তরের জনগণ মিছিল নিয়ে ঠাকুরগাঁও শহরে প্রবেশ করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেন। এ বিজয় ছিনিয়ে আনতে ১০ হাজার নারী ও পুরুষকে প্রাণ দিতে হয়। পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন দুই হাজার মা-বোন।

    এদিকে, ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনী এবং বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনীর আক্রমণে কোনঠাসা হতে থাকে হানাদাররা। ৩ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা শত্রুমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় বরগুনার বিভিন্ন জায়গায় পাক হানাদার বাহিনী পৈশাচিক নারী নির্যাতন ও গণহত্যা চালায়।

    অপরদিকে, ৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে বেনাপোল, শার্শা এলাকা ছেড়ে পিছু হটতে থাকে পাক বাহিনী এবং তাদের দোসররা। আশ্রয় নেয় শার্শার আমড়াখালি সদর ও পরের দিন আঞ্চলিক সদর দপ্তর নাভারনে।

    এর আগে ডিসেম্বর ২ তারিখ রাতে বেনাপোল বাজার থেকে আড়াই কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম পাশে রঘুনাথপুর গ্রাম ছেড়ে পালায় পাক বাহিনী এবং তাদের দোসররা। আশ্রয় নেয় প্রায় ৩ কিলোমিটার পুর্বে পোড়াবাড়ি নারানপুর মাঠ পাড়ার ব্যাটালিয়ন সদরে। ৩ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে দু‘পক্ষের সম্মুখ যুদ্ধে ও মুহুর্মুহু কামানের গুলিতে তছনছ হয়ে যায় নারানপুরে পাক সেনাদের চৌকি। মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে আগেরদিন পাক সেনারা রঘুনাথপুর ইপিআর ক্যাম্প ছেড়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে বাঁচে।

    বেনাপোলের ওপারে জয়ন্তিপুরে তখন ৫ নম্বর সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্বে তৌফিক ইলাহী। তার সাহসিকতায় সেদিন শুরু হয় প্রবল প্রতিরোধ যুদ্ধ। প্রচণ্ড গোলাগুলির খবরে ভীত সন্তস্থ পাক বাহিনী পুটখালি, শিকড়ি বটতলা, বেনাপোল কাস্টমস হাউজ এলাকা ছেড়ে রাতের আঁধারে পিছু হেটে আশ্রয় নেয় যশোর-বেনাপোল সড়কের আমড়াখালি কোম্পানির সদর দপ্তরে। এভাবেই শক্রমুক্ত হয় বন্দর নগরী বেনাপোল। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তির আনন্দে উচ্ছ্বসিত মুক্তিযোদ্ধা-জনতার ঢল নামে বেনাপোলে। পাড়া মহল্লায়ও চলে খন্ড খন্ড আনন্দ মিছিল। মুক্তির আনন্দে ফেটে পড়েন গোটা বেনাপোলের মানুষ।

    ইখা

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…