মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকরা।
এদিকে, বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ক্লাসরুম নির্মাণ ও আসবাবপত্র সরবরাহের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বাড়ছে। স্থানীয়রা দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে,২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নে ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) কারিগরি সহায়তায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৬ হাজার ৩৮৫ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের দায়িত্ব পায় মেসার্স এসই এবং তোফাজ্জল জেবি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরু হয় গত ১৩ মে এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। কাজ শেষ না হওয়ায় ৯ মাস সময় বাড়ানো হলেও কাজের গতি সন্তোষজনক নয়। চলতি মাসেই ভবন বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নিয়মিত ক্লাস ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কাজ চলাকালেই ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। তারা মৌখিকভাবে প্রকৌশলীকে জানালেও তা আমলে নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন। এবং ভবনটি নিরাপদ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: সোহেল রানা বলেন, ‘ভবনের একাধিক স্থানে ফাটল দেখা গেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পরামর্শে নির্মাণ কাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: আব্দুল আলিম কাজ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। তার মতে,ব্লক দিয়ে করা কাজে এ ধরনের ফাটল স্বাভাবিক।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান উপজেলার প্রকৌশলী কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো: বুলবুল হোসেন ফাটলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘ভবনের তিনটি কক্ষের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছিল, যা রঙের পুটিন দিয়ে মেরামত করা হয়। তবে মেরামতের পরেও ফাটল আবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো: ইমরুল হাসান বলেন, ‘ভবনের একাধিক স্থানে ফাটল ও অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ইখা