৩ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এর মধ্যে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের কমপ্লিট শাটডাউন বা বিদ্যালয় তালাবদ্ধ কর্মসূচি। এ অবস্থায় কার্যত থমকে গেছে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা।
সহকারী শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ শ্রেণির মোট ৬১১ শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা একাই নেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবা খন্দকার ইভা।
বুধবার দুপুরে ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ ফাঁকা, নেই কোনো সহকারী শিক্ষক। তবে বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে অভিভাবকরা। এ দিন শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বার্ষিক পরীক্ষার সময় শিক্ষকদের এমন কর্মসূচী পালনে ক্ষুব্ধ অভিভাবকসহ সচেতন মহল। তারা বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলেও সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালন করা মোটেই ঠিক নয়। পরীক্ষা শেষ করে তারা এ আন্দোলন করতে পারতেন। আমাদের সন্তানদের যে ক্ষতি হচ্ছে তা দেখবে কে?’
বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের কর্মসূচী স্থগিত করার দাবি জানান অভিভাবকরা। ভালো পরীক্ষা দিতে না পারলে ভালো রেজাল্ট করে পরবর্তী ক্লাসে তাদের সন্তানরা উঠবে কীভাবে এমন প্রশ্নও রাখেন তারা।
শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবা খন্দকার ইভা বলেন, ‘সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকলেও, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আসছে, বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে হবে। তাই কয়েকজন অভিভাবক ও অফিস সহায়কের সহযোগিতায় পরীক্ষা কার্যক্রম চালাতে হয়েছে।’ তবে একার পক্ষে এভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করা কঠিন বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি হাসিনুর রহমান লিটন সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, ‘কোমলমতী শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষার সময় আন্দোলন করায় তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে তারা এখন নিরুপায়। সরকার আমাদের তিনদফা দাবি বাস্তববায়ন করে দ্রুত সিদ্ধান্ত দিলেই এই সংকট নিরসন হবে।’
এসএম