ঘন কুয়াশার কারণে মাঝ নদীতে সারা রাত আটকা পড়ে ছিল নবদম্পতি বহনকারী একটি নৌকা। কুয়াশা কেটে গেলে, শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে তীরে পৌঁছায় নবদম্পতি ও যাত্রীবোঝাই নৌকাটি। জামালপুর মাদারগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। মাদারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নববধূসহ বরযাত্রী নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে যমুনা নদীর মাঝপথে ঘন কুয়াশায় দিক হারিয়ে সারা রাত নদীর মধ্যে আটকা পড়ে ছিল নৌকাটি। পরে শনিবার কুয়াশা কেটে গেলে, অন্য একটি নৌকার সহায়তায় নিরাপদে নির্দিষ্ট ঘাটের দিকে রওনা করা হয়।
খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, স্থানীয় এক কমিশনারের মাধ্যমে আটকে পড়া নৌকার আরোহীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে পুলিশের পক্ষ থেকে সারা রাত তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। এ সময় নৌকায় অবস্থারত যাত্রীদের বিচলিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বগুড়া উপজেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কলীতলা ঘাট থেকে মাদারগঞ্জ উপজেলার জমথল ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে নৌকাটি। নৌকাটি যমুনা নদীর মাঝখানে আসার পর হঠাৎ ঘন কুয়াশায় চারদিক ঢেকে যায়। এতে নৌকার চালক দিক নির্ণয় করতে না পেরে নদীর মধ্যে নৌকাটি থামিয়ে রাখতে বাধ্য হন। আটকা পড়া বরযাত্রীরা সবাই জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের তারতাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
নৌকাটিতে ১৭ জন নারী ও ৯ জন শিশুসহ মোট ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তারতাপাড়া এলাকার সানোয়ার হোসেনের ছেলে নিলয় হাসান ছানির (২২) বিয়ে উপলক্ষে শুক্রবার সকালে ৪৭ জন বরযাত্রী বগুড়া শহরের সাবগ্রাম চারমাথা এলাকায় যান। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বর-কনেসহ সবাই সড়কযোগে বগুড়া থেকে সারিয়াকান্দি কালীতলা ঘাটে আসেন। পরে একটি বড় নৌকাযোগে বাড়ি ফেরার সময় কুয়াশার কারণে দিক হারিয়ে ফেলেন নৌকার মাঝি।
এ সময় বরযাত্রীরা মোবাইল ফোনে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের চেষ্টা করলেও রাতের ঘন কুয়াশার কারণে তাৎক্ষণিক কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। ফলে নবদম্পতিসহ সবাই সারা রাত নৌকার মধ্যেই বসে থাকেন।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন চৌধুরী বলেন, “ঘন কুয়াশার কারণে পথ হারিয়ে যমুনা নদীতে আটকে পড়া নৌকার যাত্রীরা সবাই অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসেছেন। তীব্র শীতের মধ্যে দীর্ঘ সময় নদীতে অবস্থান করলেও নৌকার সব যাত্রীই সুস্থ রয়েছেন।”
এনআই